#181
|
||||
|
||||
পঁচিশ পর্ব-
“আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে জানি নে, জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না....... ” আজকে একদম কাজে মন বসছে না। বারবার আনমনা হয়ে যাচ্ছে। চোখ চলে যাচ্ছে জানালার কাঁচে। বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যেন ওর মনের মাটিটাকে ভিজিয়ে তুলছে। কাজ থেকে শতহস্ত দূরে পালাচ্ছে মনটা। আজকে অফিস আসার ইচ্ছা একেবারেই ছিল না। কোনও না কোনও বাহানায় আজ ডুব মারার ইচ্ছে ছিল। চায়ের কাপ হাতে সকালে তৃষাকে বলেওছিল। শুনে খেঁকিয়ে উঠেছিল সে। “অফিসে না গিয়ে ঐ জানলার ধারে সারাদিন চেয়ার পেতে বসে থাকবে আর রাজ্যের কাব্যি করবে, ওসব চলবে না। এটা তোমার ঐ কলকাতার পাতি অফিস নয় যে, যেতে ইচ্ছে হল গেলে, না হল গেলেনা। আর পরেরদিন যাহোক ভুজুং ভাজুং দিয়ে ম্যানেজ করবে, তা হবেনা। তৈরী হয়ে নাও। অফিস যাও।” রাহুল তৃষার হাতটা ধরে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করল। ব্যর্থ হল সে। জোর করে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল হাতটা। “এসব আদিখ্যেতা রাখো। আর অফিস যাওয়ার জন্য তৈরী হও।” বলে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়াল তৃষা। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল বুক ঠেলে। অফিস আসার পথে বাসের জানালার কাঁচে বৃষ্টির জলগুলো যেন ওর মতোই নিষ্কর্মা। পড়ছে, হারিয়ে যাচ্ছে। আবার পড়ছে। কখনও টিপটিপ। কখনও ঝমঝম। একটা সময় কমে এল তার তীব্রতা। বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু মন আজকে ওর সাথে অফিস আসেনি। অলসতা পেয়ে বসেছে তাকে। এখন সে কলকাতার এক অন্ধগলির প্রায়ান্ধকার ঘরের জানালার ধারে চেয়ার পেতে বসে মৌজ করে বসে প্রকৃতির শোভা দেখছে। আর রাজ্যের কাব্যি করছে। কিছুতেই তাকে ডেকে এনে বসানো যাচ্ছে না কাজে। তবে একটা সুবিধে আছে। এদিক ওদিক ঘাড় ঘুরিয়ে সেটা অনায়াসে টের পাওয়া যাচ্ছে। “আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে” কারোরই তেমন কাজে মন বসছে না। দুপুরের একটু পর থেকেই আকাশ কালো করে নামল বৃষ্টি। নাঃ আর কোনও উপায় নেই। একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফাইলটা বন্ধ করল। চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে দাঁড়াল জানালার কাঁচে। অসংখ্য জলের ফোঁটা ঝাপসা করছে বহির্দৃশ্য। দৃষ্টিপথকে করছে অবরুদ্ধ। চোখের সামনে শহরের চেনা ছবিটা লাগছে অপরিচিত। ভেজা বিন্দুগুলো কাঁচে গড়ে তুলছে নতুন নতুন নকশা। মুহুর্তের মধ্যে তা হারিয়ে গিয়ে তৈরী হচ্ছে নতুন নকশা। নতুন আলপনা। জলের আলপনা। ও ফিরে এল নিজের জায়গায়। চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে বেশ আরাম করে বসল। বস্ একটা জরুরী মিটিং-এ অফিসের বাইরে। তাই সবারই একটু গা ছাড়া ভাব। ধীরে ধীরে চোখের পাতা দুটো বন্ধ করল রাহুল। সাথে সাথে একরাশ অন্ধকার ভেসে এল। তারপর একটু একটু করে ফুটতে শুরু করল ছবি। কিন্তু একী! সে যা দেখবে ভেবে চোখ বন্ধ করেছিল, তা তো দেখছে না। বরং ফুটে উঠছে সম্পূর্ণ অন্য একটা দৃশ্য। পরিচিত। খুব পরিচিত। একটু পুরানো। তবে খুব পুরানো নয়। কিন্তু মনে হচ্ছে যেন বহু যুগ আগের একটা ঘটনা। পুরাতন, ধূসর মলাটের নীচে চাপা পড়া, সোঁদা গন্ধে ভরপুর, হলদেটে একটা পাতা। ময়লা, ঝাপসা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে উজ্জ্বল তার এক একটা অক্ষর। গোটা গোটা শব্দে পড়ে ফেলা যায় সবটা। সময়টা বছর কয়েক আগেকার। যখন সবকিছু এত জটিল ছিলনা। সম্পর্ক তো নয়ই। সে নিজে ছিল বইয়ের পাতা থেকে উঠে আসা উদ্ভ্রান্ত এক প্রেমিক। প্রিয়ারূপী তৃষা যেন জন্মান্তরের প্রেমিকা। ভালবাসার সংজ্ঞা ছিল একদম অন্যরকম। নিয়ম তার কাছে ঘেঁষতে ভয় পেত। সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাকের মত মনের মাল্টিপ্লেক্সে চলছে দৃশ্য। পূর্ণ তার গতি। সময়টা এমনই এক মরা আলোয় নিভে আসা বিকেল। সকাল থেকে বারিস্নানে ক্লান্ত তিলোত্তমা। ব্রেকিং নিউজে জলবন্দী শহরের ছবি সর্বত্র। কিন্তু তা ছাপ ফেলতে ব্যর্থ দুজনের মনে। জানালার ধারে মুখোমুখি বসে দুজনে। পরিচয় অর্থহীন। দুজনের দৃষ্টি সামনের দিকে নিবদ্ধ। জানলার কাঁচে ছুটে আসা বৃষ্টির ফোঁটাগুলো মাথা কুটে মরছে। বারবার। অবিরাম। নিরন্তর। হুঁশ ফিরল প্রিয়ার ডাকে। “অ্যাই, চলো না, ভিজবে?” “পাগল নাকী? জ্বরে পড়ব যে।” “দূর, কিচ্ছু হবে না। চলো না। আজ খুব ইচ্ছে করছে বৃষ্টিতে ভিজতে।” “আর যদি শরীর খারাপ হয়, তখন?” “সে আমি সেবা করে তোমাকে সুস্থ করে তুলব। এখন চলো না ছাদে।” বৃষ্টির মাঝেই দুজনে এল ছাদে। নিমেষের মধ্যে আকাশটা চলে এল নাগালের মধ্যে। আকাশ ভাঙা বৃষ্টি আহ্বান জানাচ্ছে তাদেরকে। ছাদে আসতেই মুক্ত বিহঙ্গ হল প্রিয়া। ত্রস্ত পাযে হাজির হল ছাদের মাঝখানে। প্রেমিক রইল পিছনে। ফিরে তাকাল প্রিয়া। হাতছানি ডাকল প্রেমিককে। তারপর নিজেই হাত ধরে টেনে নিয়ে এল বারিধারার মাঝে। বৃষ্টি আমোদে ভিজিয়ে তুলল দুজনকে। প্রিয়া ষোড়শী কন্যার মত চঞ্চলা। এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়়াচ্ছে হরিনীর গতিতে। প্রেমিকের দৃষ্টিপথে সিক্তবসনা এক নারী। বৃষ্টির দুষ্টুমিতে ভেজা কাপড়ের ফাঁকে স্পষ্ট হচ্ছে তার নারীত্ব। তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই কারোর। বৃষ্টিতে ভিজে পরিপূর্ণ হচ্ছে তার সৌন্দর্য। প্রস্ফুটিত হচ্ছে তার যৌবন। বুকের আঁচল আর ভেজা ব্লাউজ ঢাকতে অসমর্থ হচ্ছে তার নারী শরীরের প্রতীকি অঙ্গকে। তাতে আরো মনোময় হচ্ছে তার রূপ। একসময় স্তব্ধ হল তার গতি। এগিয়ে এল প্রেমিকের দিকে। “কী দেখছো অমন হাঁ করে?” উত্তর নিষ্প্রয়োজন। প্রেমিকের হাত গিয়ে পৌঁছাল প্রিয়ার কোমরে। এক ঝটকায় দূরত্ব কমল অনেকটাই। ভেজা চুলগুলো লেপটে আছে গালের সাথে। পরম মমতায় সেগুলো সরাতেই সদ্য ফোটা গোলাপ চোখ মেলে তাকাল। তার দৃষ্টি পড়ে নিচ্ছে প্রেমিকের ইচ্ছা। বাধাদান অসম্ভব। প্রেমিকের ঠোঁট নিম্নগামী। গিয়ে পৌঁছাল গন্তব্যে। প্রেমিকের বাহুলগ্না প্রিয়ার ঠোঁট মিশে যেতে দিচ্ছে নিজের সাথে। সময় পাচ্ছে গাঢ়ত্ব। ভেজা শরীর দুটো আরোও, আরোও ঘন হয়ে এল একে অপরের দিকে। ক্রমশ....... |
||||
Have you seen the announcement yet? |
#182
|
|||||||
|
|||||||
অসাধারণ
|
|||||||
Have you seen the announcement yet? |
#183
|
||||
|
||||
একটা বিষয়ে বেশ সন্দিহান হয়ে পড়ছি। দেখলাম সপ্তাহান্তে মাত্র তিনটি মন্তব্য টিমটিম করছে। তাহলে কী কেউই গল্পটি পড়ছে না, নাকী পড়েও মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন বলে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। গল্পটা আদৌ ভাল লাগছে না বা একঘেয়ে বোধ হচ্ছে, এমন মন্তব্য নজরে এল না। পাঠকদের উপযুক্ত মতামত পেলে ভাল লাগে। বেশ হতোদ্যমী হয়ে পড়ছি মনে মনে। -নীললোহিত
Last edited by Neellohit : 10th April 2017 at 11:57 PM. |
||||
Have you seen the announcement yet? |
#184
|
|||
|
|||
valo laglo
|
|||
Have you seen the announcement yet? |
#185
|
|||
|
|||
খুব ভালো লাগছে!
|
|||
Have you seen the announcement yet? |
#186
|
||||
|
||||
ছাব্বিশ পর্ব-
“তোমার অঝোর ধারায় ভিজে আমি নতুন হলাম নিজে মা মা পা ধা নি ধা নি আজ হারিয়ে গেছি আমি বৃষ্টি, বৃষ্টি, বৃষ্টি কেন এত তুমি মিষ্টি.......” বৃষ্টির প্রথম ফোঁটাটা ওর নরম গালে এসে পড়তেই সমস্ত দ্বিধা, সঙ্কোচ সব মুখ লুকিয়ে পালাল। মনের মধ্যে একটা কিন্তু কিন্তু ভাব তখনও রয়ে গেছিল। যাব কি যাব না ভাবনার মাঝেই একটা ভিজে দমকা বাতাস এসে ধাক্কা মারল শরীরে। একটু একটু করে সামনের দিকে এগিয়ে গেল। এই উঁচু হাই-রাইজের টেরিসে প্রথমবার এল নীলিমা। চারদিকের দৃশ্যপট হঠাৎ করে পাল্টে গেছে। পৃথিবীটাকে অনেক, অনেক বড় বলে মনে হচ্ছে। অনেক ছড়ানো। অনেক ছিটানো। এই পড়ন্ত বিকালে, অঝোর বারিধারার মাঝে গোটা টেরিস ফাঁকা। শুনশান। একটু আগের সেই কিন্তু কিন্তু ভাবটা লেজ গুটিয়ে পালাবার পথ পেল না। টেরিসের মাঝে আসতে আসতেই সমস্ত শরীর ভিজে ডাব। সাথে মনটাও। বৃষ্টির তেজ যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে তত কমছে বয়সের ভার। কমতে কমতে সে এখন ষোড়শী কন্যা। চঞ্চল তার গতি। সবুজ তার মন। সৌন্দর্য তার আধফোটা গোলাপ। বারিধারায় স্নান করে সমস্ত শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনটাও হয়ে উঠছে তরতাজা। এই মুহুর্তে ঐ দূরে দাঁড়ানো তরুবর আর তার নিজের মধ্যে বিশেষ কোনও ফারাক নেই। দুজনেই নিশ্চল। নিথর। বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা ভিজিয়ে তুলছে ওদের দুজনকেই। মনের সিক্ত ভূমিতে অঙ্কুরিত হচ্ছে নতুন ইচ্ছা। সঞ্চারিত হচ্ছে নতুন প্রাণ। তৈরী হচ্ছে নতুন সত্তা। সামান্য বৃষ্টির ধারা যে এইভাবে একজন মানুষের মনের আমূল পরিবর্তন ঘটাতে পারে, সেটা এই মুহুর্তে ওকে না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত। এই মুহুর্তে সে নীলিমা নয়। সে কেবলই এক মানবী। নামগোত্রহীনা। তার কোন পরিচয় নেই। পিছুটান নেই। পরিবার নেই। বন্ধু নেই। কোনও সঙ্গী নেই। কেবল আছে সে নিজে। আর কেউ নেই। ভীষণ দুষ্টুমির ইচ্ছা জাগছে মনে। ইচ্ছা হচ্ছে বৃষ্টির সাথে লুকোচুরি খেলতে। বৃষ্টি যেন পুরানো কোন সই। তাদের মধ্যে না আছে কোন বাধা। না বন্ধন। না লজ্জা। না সঙ্কোচ। আঁচলটাকে গাছকোমর করে নিয়ে তৈরী হল ও। কিন্তু কীসের জন্য? সেটা ও নিজেই জানে না। দু হাত মেলে দাঁড়াল ও। স্বাগত জানাল বারিধারাকে। প্রত্যেকটা ফোঁটা ওর শরীরে অদৃশ্য চুম্বন এঁকে যাচ্ছে। এই সময় কোনও একজনকে পেতে চাইছে মন। চাইছে শরীরও। সে সুমিত হলেই বা দোষ কী? একজন পুরুষ। যে আলিঙ্গন করবে তাকে। টেনে নেবে বুকে। তার ঠোঁট থেকে চুষে খাবে সুমিষ্টতা। যার বিরাট পুরুষালী বুকে নিষ্পেষিত হবে তার নরম স্তনযুগল। যার বুকে যন্ত্রণার অদৃশ্য আলপনা এঁকে দেবে তার নখের তীব্র আঁচড়। যার ঠোঁট ঝড় তুলবে ওর সারা শরীরে। যে ওর পেলব শরীরটাকে নিয়ে খেলবে ছিনিমিনি। যার উদ্যত হাত ওর শরীর থেকে সরিয়ে দেবে বস্ত্রের বাহুল্যতা। ওর লজ্জায় আনত মুখ লুকাবে তার পুরুষালী বুকে। যার ত্রস্ত আঙুল খুঁজে নেবে তার অভীষ্ট লক্ষ্য। যার প্রতিটা পদক্ষেপের কাছে হার মানবে ও। যাকে আকুতি জানাবে মনের সব জ্বালা নেভানোর জন্য। সেই সাথে শরীরেরও। ওর উত্তপ্ত শরীরের তাপ ভাগ করে নেবে উত্তুঙ্গ পুরুষত্ব। মনের মধ্যে সেই তৃপ্তি টের পাচ্ছে নীলিমা। অনুভব করতে পারছে যে তার শরীরে প্রবেশ ঘটছে পুরুষের। নীরবে। কিন্তু সবলে। সে চাইছে আরোও আরোও সুখ। পরিবর্তে পুরুষ তাকে দিচ্ছে পরিপূর্ণ তৃপ্তি। তার দিকে এগিয়ে আসছে পুরুষ শরীর। তার শরীর ভাগ করে নেবে সেই উত্তেজনা। সেই কামতাড়না। শীৎকার খুঁজে নেবে পথ। শরীর খুঁজে নেবে তৃপ্তি। গতি পাবে পূর্ণতা। সময় পাবে পরিণতি। এক সময় শান্ত হবে শরীর দুটো। রাগমোচনের শান্তি। দুজনের প্রেমরস মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। ক্লান্ত পুরুষ মাথা রাখবে তার বুকে। তার আঙুল বিলি কাটবে পুরুষের চুলে। তারপর শ্রান্তিতে চোখ বুজবে দুজনেই। একসাথে। চোখ খুলল নীলিমা। সুখকল্পনা দূর হল তার আঁখিপল্লব থেকে। কিন্তু একটু আগে সে যে তৃপ্তিটা টের পাচ্ছিল, সেটা আর অনুভূত হচ্ছে না। উল্টে শরীরে বাসা বাঁধছে তীব্র কামতাড়না। আগে কখনও এমন হয়নি। মন কখনও এভাবে আকুল ভাবে কাছে পেতে চায়নি সুমিতকে। কিন্তু আজ চাইছে। তার মন চাইছে। তার শরীর চাইছে। তার থেকেও বড় কথা, সে নিজে চাইছে। সে নিজে এই মুহুর্তে কাছে, ভীষণ কাছে পেতে চাইছে সুমিতকে। যার বক্ষলগ্না হয়ে ভুলে যাবে সমস্ত পার্থিব চিন্তা। সুমিতের শরীরের উষ্ণতা দূর করে দেবে তার মনের শীতলতাকে। সে ভেঙেগড়ে নতুন ছাঁচে ফেলে তৈরী করবে নতুন এক নারীকে। নতুন এক নীলিমাকে। তারজন্য ওর চাই সুমিতকে। শুধুই সুমিতকে। ক্রমশ....... |
||||
Have you seen the announcement yet? |
#187
|
|||||||
|
|||||||
Quote:
|
|||||||
Have you seen the announcement yet? |
#188
|
|||
|
|||
khub valo laglo
|
|||
Have you seen the announcement yet? |
#189
|
||||
|
||||
Nice story . Added reputation.
|
||||
Have you seen the announcement yet? |
#190
|
|||
|
|||
বেশ হচ্ছে...
|
|||
Have you seen the announcement yet? |
![]() |
Free Video Chat with Indian Girls
|
Thread Tools | Search this Thread |
|
|